একজন মানুষের পক্ষে জীবনে কতবার এবং কতরকম ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব?- তেত্রিশ ছাড়িয়ে চৌত্রিশ স্পর্শ করার মুহূর্তে এই একটিমাত্র প্রশ্নের মীমাংসা করতেই সময় ক্ষয়ে যাচ্ছে। ভুলের সঠিক এবং সন্তোষজনক সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে, তবেই না মীমাংসা। সঠিক মনে হলে সন্তোষজনক লাগে না, যে সংজ্ঞায় সন্তুষ্টি আসে ক্ষণকাল পরেই সঠিকতা নিয়ে সংশয় জাগে। নিজস্ব পর্যবেক্ষণ আর অনুধাবনের প্রতি আস্থা হারিয়ে হিউয়েন সাঙ এর সাথে হাঁটতে হাঁটতে ৭৯ জন মানুষ খুঁজতে থাকি যারা ভুলের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং বিদেশী গবেষণাগারে পরীক্ষাকৃত এক সংজ্ঞা দিয়ে মীমাংসার প্রথম ধাপে পৌঁছুতে সহায়তা করবে। সমস্যা হলো ১১ এর পরে আর গুনতে পারি না, এবং ১১ এর নামতা জানা চেনা-পরিচিত কোনো মানুষও নেই যে আমাকে বলতে পারবে কতবার ১১ জন মানুষের কোটা পূরণ করলে ৭৯ জন হয়। ক্রমাগত ১১ জনকে তাই আবিষ্কার করতেই থাকি, ৭৯ আর হয় না। আপাতত একটাই টার্গেট– ১১ এর নামতা জানা কয়েকজন মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া। নইলে ভুলের মহাসমুদ্রে সলিল সমাধাই নিয়তি আমার।
আচ্ছা যে ব্যক্তি ১১ এর বেশি গুনতে জানে না সে ৭৯ নিয়ে গোজরান করছে কীভাবে!

উনিশ এবং তেইশ নামের জমজ কন্যাশিশুরা ২০২০ কে তাদের স্মৃতিতে কি বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম? মাত্র আড়াই বছরের দুই মানবশিশু, স্মৃতি তাদের কতটুকুই বা পোক্ত?
১৯৭০ এ জন্মানো বর্তমানের ৫০ ছুঁইছুঁই ব্যক্তিটি সমাজের একজন সংবেদনশীল মানুষ; সমকালীন প্রতিটি ঘটনাকে বুঝবার এবং ব্যাখ্যা করবার তার নিজস্ব এক মানস রয়েছে নিশ্চিত। প্রখর সংবেদনশীল এই ব্যক্তিটির কাছেই যদি ১৯৭১ এর গল্প শুনতে চাই, কিছু কি বলা সম্ভব তার পক্ষে আদৌ?
তো এমন পরিমিত এবং পরিশীলিত মননের একজন মানুষ যেখানে ১৯৭১ এর গল্প বলতে বিফল, উনিশ-তেইশদের দোষ কী? কিন্তু যেহেতু ২০২০ এর পৃথিবীতে ওরা অবস্থান করেছে, স্রেফ বয়সের অজুহাতে ওরা কি দায় এড়াতে পারে?
এক্সকিউজ মি, জনাব ছ, করোনা বিষয়ে আপনার চিন্তাপ্রণালী একেবারেই মানতে পারলাম না। হতে পারে আপনি একজন প্রসিদ্ধ বিদ্বান, তবু আপনার ভাবনাকে শামুকবদ্ধ বলতে একটুও দ্বিধা করছি না।
জি জনাব ঠ, আপনার করোনা-চিন্তা শুনে সমাজের প্রিভিলেইজড গোষ্ঠী আপনাকে মূর্খ ভেবে পরিত্যাগ করতেই পারে, তবে যতটুকু যা উপলব্ধি করলাম, আপনার চিন্তা স্বাদ, বর্ণ এবং সুবাসযুক্ত। এই চিন্তার যন্ত নিন; বিদগ্ধদের প্রতিক্রিয়ায় হতাশ না হয়ে চলুন আদা-লং মিশিয়ে কড়া ২ কাপ চা খাই। কই গো উনিশ-তেইশ; বাবা আর আংকেলের জন্য ২ কাপ চা নিয়ে এসে এখানে চুপচাপ বসে থাকো। শোনো কী বলছি!
Customer Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “ঘোরবন্দী গোল্ডফিশ”