বই পরিচিতি
বাংলাদেশে গাছ কেটে, খাল-বিল ভরাট করে, উপরিভাগের মাটি পুড়িয়ে ইট বানিয়ে, শিল্প ও মানব বর্জ্য পরিবেশে উন্মুক্ত করে, জলাভূমিতে আবাসন ও নগরায়ণ করে দেশের জিডিপি বাড়ানো হয়। পরিবেশ সুরক্ষার প্রশ্নে বাংলাদেশের উন্নয়নের এই মডেলকে একধরনের ‘উন্নয়ন সন্ত্রাস’ বলা চলে। নাগরিক ও সরকার উভয়েরই পরিবেশগত দায়বদ্ধতা শুধু শূন্য নয়, বরং বহু ক্ষেত্রে ঋণাত্মক। আমাদের উন্মুক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিতান্তই হীন, নদী পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত পর্যায়ে অটেকসই।
উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশগত ঝুঁকিগুলোকে আমলে নিয়ে ও পর্যাপ্ত পরিবেশগত সুরক্ষা না নেওয়ার যে সংস্কৃতি, তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে এই বইয়ে। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে প্রাণ ও পরিবেশ বিষয়ক ইস্যুগুলোর সংযোগ ঘটিয়ে দেওয়াও লেখকের অন্যতম উদ্দেশ্য। নাগরিক ও সরকারের পরিবেশবিরুদ্ধ অপচর্চা নিয়ে খোলামেলা আলোচনার পাশাপাশি বইটিতে কিছু সমাধানও প্রস্তাব করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে পুস্তকের বিষয়বস্তু বিশ্ব পরিসরে বহুল আলোচিত হলেও বাংলাদেশের সমাজে এসব নতুন ধারার চমকপ্রদ কথা বলে মনে হতে পারে। বাঁচতে হলে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে আমাদের পরিবেশ ধ্বংসের নির্বোধ সংস্কৃতিকে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক, উন্নয়ন বিশ্লেষক এবং প্রযুক্তিবিদ। বহুল আলোচিত চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ পুস্তকের রচয়িতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে লেখকের দ্বিতীয় বই বাংলাদেশ: অর্থনীতির ৫০ বছর। অন্য দুটি বই অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবিত কথামালা ও উন্নয়ন প্রশ্নে বাংলাদেশের কিছু সংকট ও সম্ভাবনা।
১৯৮০ সালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বান্দুয়াইনে জন্মগ্রহণ করেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ অধ্যয়ন করেন।
২০০৫ থেকে অদ্যাবধি টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার সলিউশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডসে কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে তিনি অ্যালকাটেল লুসেন্ট বাংলাদেশ, টেলিকম মালয়েশিয়া বাংলাদেশ, এমটিএন নাইজেরিয়া, এরিকসন নাইজেরিয়া, এরিকসন ঘানা, এরিকসন দক্ষিণ কোরিয়া, এরিকসন নেদারল্যান্ডসে কাজ করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।
তার লেখায় যা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়: টেকসই উন্নয়নের নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কাঠামোগত ও পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটি, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারিগরি প্রস্তুতি, ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিক ম্যানেজমেন্টের কারিগরি দিক এবং অটোমেশন। সামাজিক সংযোগের দিক থেকে তিনি একজন টেকসই উন্নয়নকর্মী, লেখক ও গবেষক। প্রথম আলো ও দি বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় নিয়মিত উপসম্পাদকীয় লেখেন।
Customer Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “বাংলাদেশের পানি, পরিবেশ ও বর্জ্য”