সহজ করে বললে, এটা একটা গল্পের বই। নিজেকে নতুন করে তৈরির এক রহস্যময় বই। বইটা আমি কেবল পড়িইনি; বইটার সঙ্গে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম। আছি। থাকব। আমার জীবনের গল্পটাও প্রায় এ রকমই। ‘কী যে করি’, ‘কী যে করি’; এসব ভাবনা আমার মাথায়ই আসে না। নিজে কখনো হাল ছাড়িনি। আমার ভাবনায় সব সময়ই ছিল দেশ। নিজের মাধ্যমে দেশ ও মানুষের কল্যাণ। বইটিতেও তেমনি গল্পচ্ছলে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে—নিজেকে গড়ো। নিজেকে নিজের এবং সবার জন্য ভাবো। নিজের সেরাটা দেওয়ার ও তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। আমি কখনো কখনো না পারতেই পারি। সহজে আমার স্বপ্ন ধরা না-ও দিতে পারে। সে জন্য হতাশ হওয়া, নেতিয়ে পড়া বা হারিয়ে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। বইটি গল্পে গল্পে বলছে—এগিয়ে যাও। নতুন কিছু করো। অন্তত ‘কী যে করি’, ‘কী যে করি’ না ভেবে, কিছু হলেও শুরু করো। কিছু না করলে নাচো। গাও। তা-ও না করতে ইচ্ছে হলে গল্প করতে করতে হাসো। মানে, কিছু না কিছু একটা করো।
ভুল হতেই পারে। কাজ করলে ভুল হয়। তা নিয়ে পড়ে থাকা যাবে না। একা না পারলে দু-একজনকে সঙ্গী বানাতে পারো। রাব্বী যেমন বইটা লিখতে গিয়ে টিম বানিয়েছে। গবেষণা করেছে।
বইটির আরও যে বিষয় আমার ভালো লেগেছে তা হলো, বইটি কেবল পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। নিজে পড়লাম, শেলফে গুছিয়ে রাখলাম বা নিজে পড়তে পড়তে মাথার পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম—এসবের পাশাপাশি বইটিকে একটা মানবিক ও সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে চাওয়া। যেখানে আমিও থাকতে চাই।
ফলে সবার ‘কী যে করি’ ফোবিয়া দূর হবে। কিছু একটা করা শুরু করে দেবে। দেশের মূল্যবান সম্পদ তরুণ-কিশোরদের এক ছাতায় আনবে। ওরা কথা বলবে—সবাই শুনবে, শিখবে এবং শেখাবে। যে যেটা ভালো পারে, তাকে দিয়ে সেটা করা হবে। কাজের অভাব হলে, স্বপ্নপূরণে সবাই মিলে প্রয়োজনে নতুন কাজ সৃষ্টি করবে। তারপরও থামা যাবে না। এককথায় বইটাকে মূল ধরে—বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বেকারত্বকে; যা হবে আসলেই আনন্দের, সাহসের ও গর্বের। দেখা হচ্ছে সেই পরিবর্তনে। বইটির সঙ্গে; সৃষ্টির পথে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক
সংসদ সদস্য, নড়াইল-২
Be the first to review “কী যে করি”