• বলা ও না-বলা কথা

    মনজুরুল আহসান খান

    কমরেড মনজুরুল আহসান খান মাত্র ২০ বছর বয়সে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ অর্জন করেন। ছাত্রাবস্থায়ই কাজ করেন পোস্তগোলা ও তেজগাঁও শ্রমিক বস্তিতে এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের শ্রমিকদের সঙ্গে। ১৯৭১ সালে তার বয়স ২৬। বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হলো, কিন্তু ঘর বাঁধার আয়োজন উপেক্ষা করে মনজুর ঘর ছাড়েন ও মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর অধীনে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
    দেশ শত্রুমুক্ত হলো, কিন্তু শোষণমুক্ত হলো না। তিনি ফিরে যান উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজে। দায়িত্ব নেন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠিত করার। ‘৭৫-এ রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। দেশে সামরিক শাসনের উত্থান। ১৯৮৪ সালে দেশব্যাপী ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে তাকে গ্রেফতার করা হলে ঢাকা শহরে বাস শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। সোভিয়েত সমাজতন্ত্র অস্ত যাওয়ায় বাঘা বাঘা সমাজতন্ত্রীরা সমাজতন্ত্রের শেষ দেখে ফেললেও মনজুরুল আহসান খানের নেতৃত্বেই ঢাকায় ‘সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম চলবে’ ব্যানারে মিছিল হয়।
    কমিউনিস্ট পার্টির এই উপদেষ্টার বয়স এখন আশি ছুঁই ছুঁই। ১৯৭৩ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়সে পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে তিনি অন্যতম সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন দফায় ছিলেন পার্টির সভাপতি। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও জোটের অন্যতম স্থপতি এই ক্যারিশমাটিক ও লড়াকু গেরিলা কমিউনিস্ট নেতা। গণশিল্পীদের সংগঠন উদীচী’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি।
    গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ডাকসাইটে এই শ্রমিক নেতা মন ও মননে একজন পুরাদস্তুর শিল্পীও বটে। ভালোবাসেন গান, ভালোবাসেন আবৃত্তি করতে।

    ৳ 272৳ 340