গ্যাপশেডিং
৳ 720ডাক্তার সারাবন তহুরার সঙ্গে যতটুকু মিথস্ক্রিয়া ঘটেছে সবটাই কন্যাদের চিকিৎসাসূত্রে। এর মধ্যেই জেনেছি জীবনের একটা দীর্ঘসময় পর্যন্ত তিনি লেখক হতে চেয়েছিলেন, ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র নির্মাণের। তিনি কি নিশ্চিত তার চাওয়া পূরণ হবে না? কমিউনিকেশন আর কানেক্টিভিটি তৈরির যে ইউনিক যোগ্যতা তার মধ্যে আবিষ্কার করেছি তা কি রয়ে যাবে অগ্রন্থিত? শেখ নাবিল হোসেন সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী, ভার্সিটিতে আমার ২ ব্যাচ সিনিয়র ছিলেন। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২০ ঘন্টা ভার্চুয়াল আড্ডা হয় আমাদের। ভার্সিটি জীবনে নিজে ব্যান্ড মিউজিক করতেন, এখনও কনসার্টে তরুণদের সাথে একই আবেগে গলা মেলান। তার বিশুদ্ধ অ্যারোগ্যান্স কি পেতে পারে না আরেকটু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ? বর্তমানে আমেরিকা অভিবাসী শিহাব উল্লাহ ভার্সিটি জীবনে প্রকাশ করতেন বুয়েটিক নামের সাহিত্য পত্রিকা, নিজে লিখতেন সাহিত্য সমালোচনা। তারুণ্যের সেই সাহিত্য আন্দোলন কি মিস করেন এখনো? এতসব অনিশ্চয়তার মেঘ নিয়ে আমি ছুটে যাই রাইসুল কবিরের নিকট, যিনি ৫৫০ জনের আইটি কোম্পানি পরিচালনা করছেন কেবল এমপ্যাথির ওপর নির্ভর করে। ঘন্টার পর ঘন্টা তার সাথে আলাপ করি, সেসব আলাপকে সংরক্ষণ আর প্রক্রিয়াজাত করে অনুলেখকের সহায়তায় নির্মাণ করি একটি বই যার বিষয়বস্তু এমপ্যাথি। সারাবন তহুরা, শেখ নাবিল হোসেন কিংবা শিহাব উল্লাহ-সহ আমাদের প্রতিবেশেই এমন অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা এক বা একাধিক ইউনিক কোয়ালিটির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কেবল লেখালিখিতে প্রায়োরিটি না দেয়ার কারণে তাদের চিন্তাপ্রক্রিয়া হয়ে গেছে গুপ্তধন। কিন্তু জ্ঞান আর প্রজ্ঞা তো কপিরাইটবিহীন; সম্প্রদান কারকে সম্প্রসারণেই তার সমৃদ্ধি। হে পাঠককুল, আমার সম্পর্কে জানাটা জরুরি নয়, তবু যদি আগ্রহ বোধ করেন আপনার পরিমণ্ডলের মানুষদের ইউনিকনেস অনুসন্ধান শেষে একটু পাড়ার মোড়টাতে এসে দাঁড়ান; ডাবের দোকানে ডাব খাই চলুন।
[email protected]৳ 900ঘোরবন্দী গোল্ডফিশ
৳ 464উনিশ এবং তেইশ নামের জমজ কন্যাশিশুরা ২০২০ কে তাদের স্মৃতিতে কি বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম? মাত্র আড়াই বছরের দুই মানবশিশু, স্মৃতি তাদের কতটুকুই বা পোক্ত?
১৯৭০ এ জন্মানো বর্তমানের ৫০ ছুঁইছুঁই ব্যক্তিটি সমাজের একজন সংবেদনশীল মানুষ; সমকালীন প্রতিটি ঘটনাকে বুঝবার এবং ব্যাখ্যা করবার তার নিজস্ব এক মানস রয়েছে নিশ্চিত। প্রখর সংবেদনশীল এই ব্যক্তিটির কাছেই যদি ১৯৭১ এর গল্প শুনতে চাই, কিছু কি বলা সম্ভব তার পক্ষে আদৌ?
তো এমন পরিমিত এবং পরিশীলিত মননের একজন মানুষ যেখানে ১৯৭১ এর গল্প বলতে বিফল, উনিশ-তেইশদের দোষ কী? কিন্তু যেহেতু ২০২০ এর পৃথিবীতে ওরা অবস্থান করেছে, স্রেফ বয়সের অজুহাতে ওরা কি দায় এড়াতে পারে?
এক্সকিউজ মি, জনাব ছ, করোনা বিষয়ে আপনার চিন্তাপ্রণালী একেবারেই মানতে পারলাম না। হতে পারে আপনি একজন প্রসিদ্ধ বিদ্বান, তবু আপনার ভাবনাকে শামুকবদ্ধ বলতে একটুও দ্বিধা করছি না।
জি জনাব ঠ, আপনার করোনা-চিন্তা শুনে সমাজের প্রিভিলেইজড গোষ্ঠী আপনাকে মূর্খ ভেবে পরিত্যাগ করতেই পারে, তবে যতটুকু যা উপলব্ধি করলাম, আপনার চিন্তা স্বাদ, বর্ণ এবং সুবাসযুক্ত। এই চিন্তার যন্ত নিন; বিদগ্ধদের প্রতিক্রিয়ায় হতাশ না হয়ে চলুন আদা-লং মিশিয়ে কড়া ২ কাপ চা খাই। কই গো উনিশ-তেইশ; বাবা আর আংকেলের জন্য ২ কাপ চা নিয়ে এসে এখানে চুপচাপ বসে থাকো। শোনো কী বলছি!৳ 580চিন্তা এক্সপ্রেস
৳ 400মেহরাব শাহরিয়ারকে চেনেন? ভার্সিটির সিনিয়র, ব্লগিংসূত্রে দীর্ঘ ১৪ বছরের জানাশোনা, সম্প্রতি একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তিনি, ‘তোমার ব্লগের লেখার সঙ্গে বইয়ের লেখালেখি-ভাষাভঙ্গি কোনোক্রমেই মেলাতে পারি না, এমনও মনে হয় দুজন লেখক সম্পূর্ণ পৃথক মানুষ’; কিংবা সাফির আব্দুল্লাহ সম্পর্কে জানেন? তার অভিমত, ‘মুখোমুখি গল্পসঙ্গী বা গল্পের চরিত্র হিসেবে আপনি যতটা আকর্ষণীয়, লেখক হিসেবে অনেকখানিই নিষ্প্রভ। আপনার লেখার সিরিয়াস ক্রিটিক হওয়া উচিত’; কিংবা কীভাবে ভুলবেন খায়রুল নামের সেই তরুণকে, যে বলেছিল, ‘ব্যক্তি হিসেবে আপনি স্বৈরাচারী, যুক্তিহীন, একগুঁয়ে; কিন্তু লেখায় আশ্চর্যরকম পরিশীলিত এবং নির্মোহ; এতটা বৈপরীত্য একই মানুষ কীভাবে ধারণ করে!’ তবে এদের সবাইকে সোৎসাহে বিস্মৃত হলেও মনে রাখুন হিউম্যানল্যাব বইয়ে বর্ণিত পাপড়িকে যে করেছিল অমোঘ প্রশ্নটি, ‘তোমার নিজেকে কেন সৃজনশীল মনে হয়; তোমার বিশেষত্ব কী, যা আমার বা যেকোনো গড় মানুষের মধ্যে অনুপস্থিত; লিখতে পারাই সৃজনশীলতা? কেন ভাবছ লেখার জন্য সময় বরাদ্দ রাখলে আমি বা সেই ব্যক্তি তোমার চেয়ে সুন্দর চিন্তাসম্পন্ন লেখা লিখতে পারবে না?’
ভাবাভাবিতে ইস্তফা দিলাম, মন চাইলে himalaypi.com ব্লগে হানা দিতে পারেন, না চাইলে যাইগা; আফিফ হোসেনের ব্যাটিং দেখি বরং
[email protected]
৳ 500মৌনতা ক্লাব
৳ 336হিমালয় কোনো বইয়ে লহিয়মা কিংবা হিলমায় হলে কি জাত চলে যাবে?
জাতের প্রসঙ্গই যেহেতু এল একটা গল্প বলি। ত্রিধা নামের এক কন্যাশিশু আমার লেখা ‘প্রযত্নে-হন্তা’ বইটি হাতে নিয়ে খুব চিন্তায় পড়ে গেল, একেবারে রোদের মতো নীরব। একপর্যায়ে থাকতে না পেরে জেরা শুরু করল- ‘আঙ্কেল, তুমি কি চুরি করেছ?’ হঠাৎ এই প্রশ্নের হেতু কী, বোঝার চেষ্টা করব তার আগেই বইয়ের ২য় ফ্ল্যাপে আঙুল তাক করে বলে, ‘একে ধরিয়ে দিন লিখে পত্রিকায় যেমন ছবিসহ বিজ্ঞাপন দেয়, তোমার ছবিও বইতে সেভাবে ছাপা হয়েছে। ছিঃ আঙ্কেল, তোমাকে ভালো মানুষ ভেবেছিলাম।’
আত্মপক্ষ সমর্থনের ভঙ্গিতে জানাই, ‘বাবু, আমি তো লেখক; যারা টাকা দিয়ে বই কেনে তারা যাতে রাস্তাঘাটে দেখলে চিনতে পারে সে জন্য ছবি দিয়েছি।’ শুনে সে নতুন আব্দার ধরল, ‘তোমার নাম-ছবি সরিয়ে আমারটা বসালেই কি লোকজন তখন আমাকে চিনবে? খুবই সহজ কাজ, করে দাও না আঙ্কেল।’
সরলমনে বললেও বাচ্চাটার কথার ওজনে ধরণি ক্রমশ দ্বিধা হতে থাকে; সামান্য ভাষাজ্ঞান আর কিছু বই পড়া-সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা পুঁজি করে যেকোনো মানুষই লিখতে পারে, তারা যদি প্রেসের লোককে হাত করে নাম আর ছবি অপসারণ করে, শত-সহস্র বাক্য আর শব্দের কল্পনাস্বত্বও তো লোপাট! নাম-ছবি কিছুই নেই তবু ছয়-সাতটা বাক্য পড়েই অনুমান করা যাবে সম্ভাব্য লেখকের পরিচিতি, তেমন সিগনেচার টোন তৈরি করতে না পারলে লেখককে মনে হবে বাংলা সিনেমার জাম্বু— এমন পর্বতপ্রমাণ শরীর শুধু নায়কের বেদম প্রহার সয়েই বিনোদন দিয়ে গেল! তাই সভয়ে সকাতরে ছবি একটা দিচ্ছি বটে, কিন্তু কেবলই মনে হচ্ছে এই বুঝি ঘুষি বাগিয়ে আসছে তেড়ে নায়ক জসিম।
[email protected]৳ 420রঙপ্যাথি
৳ 320হিমালয় কোনো বইয়ে লহিয়মা কিংবা হিলমায় হলে কি জাত চলে যাবে?
জাতের প্রসঙ্গই যেহেতু এল একটা গল্প বলি। ত্রিধা নামের এক কন্যাশিশু আমার লেখা ‘প্রযত্নে-হন্তা’ বইটি হাতে নিয়ে খুব চিন্তায় পড়ে গেল, একেবারে রোদের মতো নীরব। একপর্যায়ে থাকতে না পেরে জেরা শুরু করল- ‘আঙ্কেল, তুমি কি চুরি করেছ?’ হঠাৎ এই প্রশ্নের হেতু কী, বোঝার চেষ্টা করব তার আগেই বইয়ের ২য় ফ্ল্যাপে আঙুল তাক করে বলে, ‘একে ধরিয়ে দিন লিখে পত্রিকায় যেমন ছবিসহ বিজ্ঞাপন দেয়, তোমার ছবিও বইতে সেভাবে ছাপা হয়েছে। ছিঃ আঙ্কেল, তোমাকে ভালো মানুষ ভেবেছিলাম।’
আত্মপক্ষ সমর্থনের ভঙ্গিতে জানাই, ‘বাবু, আমি তো লেখক; যারা টাকা দিয়ে বই কেনে তারা যাতে রাস্তাঘাটে দেখলে চিনতে পারে সে জন্য ছবি দিয়েছি।’ শুনে সে নতুন আব্দার ধরল, ‘তোমার নাম-ছবি সরিয়ে আমারটা বসালেই কি লোকজন তখন আমাকে চিনবে? খুবই সহজ কাজ, করে দাও না আঙ্কেল।’
সরলমনে বললেও বাচ্চাটার কথার ওজনে ধরণি ক্রমশ দ্বিধা হতে থাকে; সামান্য ভাষাজ্ঞান আর কিছু বই পড়া-সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা পুঁজি করে যেকোনো মানুষই লিখতে পারে, তারা যদি প্রেসের লোককে হাত করে নাম আর ছবি অপসারণ করে, শত-সহস্র বাক্য আর শব্দের কল্পনাস্বত্বও তো লোপাট! নাম-ছবি কিছুই নেই তবু ছয়-সাতটা বাক্য পড়েই অনুমান করা যাবে সম্ভাব্য লেখকের পরিচিতি, তেমন সিগনেচার টোন তৈরি করতে না পারলে লেখককে মনে হবে বাংলা সিনেমার জাম্বু— এমন পর্বতপ্রমাণ শরীর শুধু নায়কের বেদম প্রহার সয়েই বিনোদন দিয়ে গেল! তাই সভয়ে সকাতরে ছবি একটা দিচ্ছি বটে, কিন্তু কেবলই মনে হচ্ছে এই বুঝি ঘুষি বাগিয়ে আসছে তেড়ে নায়ক জসিম।
[email protected]৳ 400সিগনেচার সরণ
৳ 544মানুষ হিসেবে আমি পরিত্যক্ত এবং পরিত্যাজ্য, কী হবে আমার সম্পর্কে জেনে! তার চাইতে কেন আমার সাথে সম্পর্কচ্যুতি ঘটে সবার, নির্মোহ মূল্যায়ন শোনাই:
— কথা এবং আচরণে অন্যদের প্রতি অশ্রদ্ধা-অসম্মান প্রদর্শন
— প্রশংসায় কৃপণ, সমালোচনায় উদারহস্ত নীতি
— রসিকতার নামে ব্যঙ্গ এবং উপহাস
— স্যাডিস্ট মানসিকতা
এ রকম বৈশিষ্ট্যের মানুষ যদি সৃজনশীলতার অনুশীলন করে, সেখানে নিহিলিস্ট প্রবণতাই প্রাধান্য পাবে। মূল্যস্ফীতি বসিয়েছে মরণকামড়। ভাইরাস আর যুদ্ধের ডামাডোলে বদলে গেছে জামার নকশা, পকেট এতই ক্ষুদ্র যে তাতে ধরছে না মানিব্যাগ, তাই টাকাও হাওয়ায় ভেসে উধাও হয়েছে কোথাও। মানুষ চাল-ডাল-তেল-লবণ কেনার টাকা খুঁজতেই কলিজা-শিরদাঁড়া হয়ে গেল সিঙ্গারা। পোশাক-পরিবহন-মোবাইলের খরচ কি ভূতে জোগাবে? এর মধ্যে বই কেনার বরাদ্দ চাওয়া অতিমানবের লক্ষণ সাব্যস্ত করেছে মুরুব্বিগণ। ভূত যদি ভূতলে নেমে এসে বিনামূল্যে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয় বই, পড়ার জন্য সুস্থির মন তৈরির ভূত কি পাওয়া যাবে খুঁজে? মন বোঝার সাধ্য থাকলে ভূতগিরি ছেড়ে চম্পট দিত ভূত স্বয়ং। এ রকম ঘোরতর দুঃসময়ে যে ব্যক্তি বই লিখতে বসেছে শুধুমাত্র এই ননসেন্স কাজের জন্যই তাকে একঘরে করা উচিত।
[email protected]৳ 680হিউম্যান ল্যাব: মৌন মানুষ মানসে
৳ 480আমার ৭টি সনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য:
– যত্রতত্র মৌলিক সংখ্যার অতি ব্যবহার
– অবসেসন, লিসেনিং, অ্যারোগেন্স, হিউমার, কানেক্টিভিটি, অস্তিত্ব, প্রশ্ন প্রভৃতি শব্দাবলীর পৌনঃপুনিকতা।
– চা, ক্রিকেট, দাবা, এক্সপেরিমেন্ট, বয়সে বড় নারীদের প্রতি আসক্তির কথা বারবার উল্লেখ।
– রেফারি বাজায় বাঁশি/গরুর দরে খাসি- জাতীয় ননসেন্স রাইম লেখা।
– কারণে-অকারণে মানুষের প্রকৃত নাম বদল করে দিয়ে তাকে স্ব-উদ্ভাবিত কোনো নাম বা উপাধি প্রদান এবং সেই নাম বা উপাধি প্রতিষ্ঠা করে ফেলা।
– কথায় কথায় ১৭০০, ১৯০০, ১৭০০০ কিংবা ২৩০০০ টাকার অংকে বাজি ধরা। জিতলে টাকা নিই না কখনো, কেবলমাত্র বাজিজীবীকে ১১ জন মানুষের সামনে স্যরি বলতে হয়। হারলে অবশ্য টাকা দিয়ে দিই।
– ছলে-বলে-কৌশলে নিজের ইমেইল এড্রেস যরসধষধু৭৭৭@মসধরষ.পড়স-এর উল্লেখ এবং ইমেইল চেয়ে অনুনয়-বিনয় করা। (আরো বেশ কয়েকটা আছে, সেগুলো আপনার হোমওয়ার্ক/এসাইনমেন্ট হিসেবে দিয়ে রাখলাম। আমার সম্পর্কে জেনে কী হবে মিঞা? বই পড়েন!)
৳ 600