আপনার-আমার উভয়ের সময়ই মূল্যবান; কথা ঠিক কি না? ব্যক্তি হিসেবে মূল্য না-ও থাকতে পারে; জম্পেশ সামাজিক গবেষণা পরিচালনা করতে পারলে বলা যেত কী কী শর্তপূরণ সাপেক্ষে একজন মানুষ মূল্যবান, অন্যজন আম-কাঁঠাল হয়। সে যাকগে, আপনার সময় বাঁচাতে একটা সৎ পরামর্শ দিই। যদি এটাই আপনার পড়া আমার প্রথম বই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে ক্রয়মূল্য পরিশোধ করতে মানিব্যাগ খুলে যে দঙ্গল নোটগুলোকে উৎখাত করেছেন, দোহাই তাদের ফিরিয়ে আনুন। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরাক বা না ফেরাক, টাকা ফিরিয়ে নিতে দ্বিতীয় চিন্তার সুযোগই নেই।
এ বইটি সেই বয়সে লেখা, যখন ভাবতাম লেখালেখির মাধ্যমে গোয়ালভরা ধান আর গোলাভরতি গরুর বিস্ময়কর সমাবেশ ঘটাব, যে কারণে এখানকার গল্পগুলো পড়ে দেড় মিনিট চুপচাপ চিন্তা করলে বিচক্ষণ মানুষমাত্রই উপলব্ধি করবেন জনৈক আনাড়ি অথচ নার্সিসিস্ট তরুণ নারিকেল আর কামরাঙাসহযোগে বিরিয়ানি রান্নার কসরত দেখিয়ে চলেছে এক সপ্তাহ যাবৎ, অথচ উনুনে আগুনই জ্বালানো হয়নি জানা নেই তার। ২০১৩-তে প্রকাশিত ‘বীক্ষণ প্রান্ত’ বইয়ের ‘কিন্তু’ গল্পটি পত্রিকায় ছাপানোর দুরভিসন্ধিতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত সবগুলো দৈনিকেই ধরনা দিয়েছিলাম, সেই ধরনা ঘুণে খাওয়ার পরই নিশ্চিত হই লেখক হিসেবে আমি দিলদার!
তবু লিখছি, কারণ লিখলে মানুষ হিসেবে নিজের মিডিওক্রিটিকে জায়েজ করার নানান অজুহাত দেওয়া যায়। আমার অন্য কয়েকটি বই পড়ার পর যদি অস্বস্তি জাগে, এই লোকের সমস্যা কী, তার লেখাজোখা এমন কেন অথবা সে কী বলতে চায়—একমাত্র সে ক্ষেত্রেই এই বইয়ের ‘…র্দাপ’ গল্পটি পড়ে অন্যগুলোর স্বাদ চেখে দেখতে পারেন (গল্প কি তরকারি যে চাখতে হবে? বইয়ের মতো গম্ভীর জিনিস নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা, ছিঃ!)
নইলে ফ্ল্যাপ পড়তে সময় অপচয় হলো অযথাই। ক্ষোভ অথবা আক্ষেপ নিয়ে জিলাপি খেতে খেতে দেশ ও জাতি উচ্ছন্নে যাচ্ছে ভাবতে ভাবতে যা মন চায় করুন।
Title | প্রযত্নে- হন্তা |
Author | মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় |
Publisher | আদর্শ |
ISBN | 978-984-94696-6-7 |
Edition | 1st Published, 2021 |
Number of Pages | 176 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
একটা গুরুতর প্রশ্ন, উত্তর খুঁজছি: লিটন দাসের ব্যাটিং কেমন লাগে?
ক্রিকেট ইতিহাসের দৃষ্টিনন্দন ব্যাটসম্যানদের তালিকা করলে ৫০ পেরিয়ে যাবে কয়েক মিনিটেই, কিন্তু কারও ব্যাটিংয়ের সঙ্গেই লিটন দাসের মিল পাচ্ছি না। ক্রিকেটিং সেন্স, মানসিক দৃঢ়তা, সামর্থ্যকে নিয়ামক ধরলে সে গড়পড়তা বাঙালি চরিত্রেরই প্রতিচ্ছবি, কিন্তু যদি শৈল্পিক বিমূর্ততাকে অনুষঙ্গ ধরি, তার মানসিক গঠন-গড়নের সঙ্গে ভ্যান গগ অথবা এস এম সুলতানের দূরবর্তী নৈকট্য আবিষ্কার করি। উদাসী, খামখেয়ালি ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাহীন, অথচ প্রখর আত্মতুষ্টিপূর্ণ। ক্রিকেটের মতো কঠোর পারফর্মিং স্কিলের খেলায় এ রকম শিল্পীচরিত্রের একজন আপাত-ভঙ্গুর মানুষ কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে, সেই পর্যবেক্ষণ আমার বিচিত্র বিনোদন। অব্যাখ্যানীয় কিছু একটা আছে তার ব্যাটিংয়ে, যা খুঁজে পাচ্ছি না এবং পাই না বলেই কখনো বিব্রত হই, কখনোবা ভর করে হীনম্মন্যতা।
এবং পৃথিবীতে সে-ই একমাত্র শিল্পী, যার প্রতিটি সমীহ জাগানিয়া পারফরম্যান্সকে অর্থমূল্যে উদ্যাপন করি। টি-২০ তে ৪১, ওয়ানডেতে ৭৩ এবং টেস্টে ৮৯ রান স্পর্শ করলেই চেনা অথবা অর্ধ-চেনা একজন ব্যক্তিকে বই কেনার লাইসেন্স দিই; নিজের পছন্দের একটি বই সে কিনতে পারবে, ক্রয়মূল্যের থাকে না সুনির্দিষ্ট সীমা।
লিলিয়ান গার্সিয়াকে চেনেন? রেসলিং দেখে থাকলে তার সম্বন্ধে জানা উচিত। না জানলে গুগল ওস্তাদকে জিগিয়ে নিন।
শেষ প্রশ্ন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৭ দিন অবকাশ কাটাতে চাই। হোটেল-টোটেলে না, সাতজন পৃথক ব্যক্তির বাসায় আতিথ্য গ্রহণ করব। চেনেন নাকি এ রকম সাতজনকে? দেন না খুঁজে। দুনিয়ায় এত জায়গা থাকতে ঠাকুরগাঁও কেন? সেই গল্পটা লিখব বলেই তো সাত বছর বয়স থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার-বয়সের মানুষের গল্প শুনে চলেছি অবিরাম। এই সব লেখালেখি নর্দমায় যাক, চলুন গল্পে বসি Whatsapp-এ!
[email protected]
Be the first to review “প্রযত্নে- হন্তা”