২০০১ সালে নিউইয়র্কের এক আকাশচুম্বী বিল্ডিংয়ে শাহরিয়ার ও রাশাদ দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছিলেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার স্বপ্ন দেখতেন তারা। ওই বছরেই শুরু হলো ‘কল্যাণী’ প্রজেক্ট, যা আসলে শাহরিয়ারের মায়ের নাম। ২০০৭ সালে ঢাকায় চালু হলো তাদের ডাটা সেন্টার। এটা অনলাইন ফোরাম, সরকারি ডকুমেন্ট, সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালাইসিস করে প্রতিটা রাজনৈতিক পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সংকট, এমনকি প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাস দিতে পারত।
দলে যুক্ত হলো ব্রায়ান, ভিয়া ও হৃদি— তিনজনই ডাটা অ্যানালাইসিসে দক্ষ। ২০১৩ সালে ‘কল্যাণী’ অবাক করে দিল সবাইকে, কারণ এটা আগেভাগেই শাহবাগ আন্দোলন, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং ভবিষ্যৎ ২০১৮-এর ছাত্র-আন্দোলনের পূর্বাভাস নির্ভুলভাবে দিয়েছিল। ৭৪-৮৭ শতাংশ নির্ভুলতায় এটা ভবিষ্যৎ ক্রাইম, মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসংকট ও অর্থনৈতিক দুর্যোগের (যেমন, পেঁয়াজের দাম...) ইঙ্গিত দিতে পারত। কিন্তু প্রশ্ন থেকে গেল— এই শক্তিশালী প্রযুক্তি কি মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে, না কি ক্ষমতার লড়াইয়ে অস্ত্র হয়ে উঠবে? এই বই সেই স্বপ্নদর্শী তরুণ-তরুণীদের গল্প। সেই তরুণ-তরুণীরা প্রযুক্তির মাধ্যমে গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে পেরেছিল কি না সেটার গল্প।