শৈশবে মাতৃহারা এতিম মারজান দেখতে সুন্দরী, বুদ্ধিমতী। জীবন একেক মানুষকে নিয়ে একেকভাবে খেলে। মারজানকে নিয়ে যেভাবে খেলে তাতে তার সামনে সফল মডেল এবং চিত্রনায়িকা হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সৎমা-বিতাড়িত ইসমাইলকে নিয়ে জীবন যেভাবে খেলে তাতে তার শিল্পপতি হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সম্ভাবনা তৈরি হবার পর মানুষ যখন কোনো কাল্পনিক মূল্যবোধকে ধারণ করে বসে থাকে তখন সে সাধারণত ব্যর্থ হয়। যখন সে নগ্ন নিরেট বাস্তবতাকে ধারণ করে ফেলে তখন সে সাধারণত সফল হয়। মারজান এবং ইসমাইল দুজনেই নগ্ন নিরেট বাস্তবতাকেই ধারণ করে। মারজানের ধারণকৃত বাস্তবতা এবং ইসমাইলের অর্জিত সাফল্য দুজনকে এক শয্যায় মিলিয়ে দেয়।
নরনারীর জীবন শুধু শয্যায় শায়িত হবার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সুখ-দুঃখ, আবেগের আরো নানান সজ্জায় সে সজ্জিত হতে চায়। এত কিছু চাইতে গিয়ে সে অনেকসময় তার নগ্ন নিরেট বাস্তবতা থেকে সরে আসে। নগ্ন নিরেট বাস্তবতাকে ধারণ করার পর কেউ যখন একমুহূর্তের জন্যেও সেই বাস্তবতা থেকে সরে আসে তখন বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে। সেই বিপর্যয় সামাল দেবার জন্য এর চেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটাতে হয়। মারজান ও ইসমাইলের জীবনেও এসব ঘটে। এসব ঘটনাবলিতেও দেখা যায়, কোনো নীতিনৈতিকতা বা আবেগী চাওয়াপাওয়ার জয় ঘটে না, বরং শক্তিশালীর কাছে দুর্বলের পরাজয় ঘটে। প্রকৃতির মৌলিক নিয়ম (শক্তিশালীর কাছে দুর্বলের পরাজয়) অক্ষুণ্ণ থাকে।